প্রবাহ ডেস্ক: রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকজন যুবক। তারা নিজেদের বিপ্লবী ছাত্রজনতা ও জুলাই যোদ্ধা হিসেবে দাবি করছেন।
তারা বলছেন, বিএনপির এই নেতাকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত তারা তাদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাবেন না।
রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টা থেকে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তবে তারা কোনো ব্যানারের নামে কর্মসূচি পালন করছেন না।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ জন আন্দোলনকারীরা বিপ্লবী ছাত্র-জনতা ফজলুর রহমানের বাসার সামনে রাস্তায় কাগজ বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলছেন, বিএনপির এই নেতা আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য বয়ান দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাকশালী মতবাদকে আবারও পূর্ণ স্থাপনের জন্য চেষ্টা করছেন। তিনি সরাসরি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যারা আন্দোলন করেছেন তাদের তিনি রাজাকারের বাচ্চা বলছেন। প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়াদের মধ্যে একজন হলেন জনি আকন্দ। তিনি দাবি করেন চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করার সময় তিনি ইউনিভার্সিটি ছাত্রদল শাখার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলন শেষে তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য হলেও এখন আর সেখানেও নেই। তিনি বর্তমানে নিজেকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের যোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন।
তিনি এ কর্মসূচির বিষয়ে বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বলেছেন। তার সুর শেখ হাসিনার মতই। শেখ হাসিনাও আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতিপতি বলেছিলেন। তিনি এখন নিজে এবং দল নিয়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন।
জনি আকন্দ বলেন, ৫ আগস্ট নাকি ৭১ পরাজিত হয়েছে এবং কালো শক্তি বিজয়ী হয়েছে। এটা কেমন কথা ৭১’কে নিয়ে তিনি এমন কথা কেন বলবেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা দেশ পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি, স্বাধীন সার্বভৌমত্ব পেয়েছি। ৭১ সঙ্গে তিনি কেন ২৪শে এর আন্দোলনকে মেলাচ্ছেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিএনপিও যুক্ত ছিল। আসলে তিনি বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং বাকশালী মতবাদ প্রচার করছেন। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি এবং অনুরোধ করছি তাকে যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়।
বাকশালী পেত্মারা যেন আইনের বাইরে না থাকে। আর ফজলুর রহমান একজন ভাইরাস, তার কথাবার্তা ভাইরাস। তাকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, কিছু লোক অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়কে অবস্থান নেয়। এতে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। দুপুর পৌনে ১টার দিকে আমাদের অনুরোধে তারা সড়কের পাশে অবস্থান নিয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরাও রয়েছে যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।
এর আগে এক টকশোতে জুলাই আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরে বিএনপি থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়। এরপরই রোববার মধ্যরাত থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় তার বাসায় সামনে কয়েকজন লোক জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।