নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল। বিএনপি জনগণের শক্তি, ভোট ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। এই দল তিনটি বিষয়ে বেশী বিশ্বাস করে। এক হচ্ছে সততা, আইন শৃংখলার প্রতি বিশ্বাস ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উৎপাদনমূখী রাজনীতি। তিনি
শনিবার ( ১২ জুলাই) দুপুর ১২ টায় রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী ভুবন মোহন পার্কে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল বলে দীর্ঘ সতের বছরের নির্যাতনেও পিছুপা হয়নি। হাজার হাজার ও লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী আসামী হয়ে দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রেখেছে। দীর্ঘ ষোল বছরে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিতারিত করতে তারুন্যের অহঙ্কার তারেক রহমান দিক নির্দেশন দিয়ে এসেছেন। এরই ফলশ্রুতি হচ্ছে জুলাই-আগস্ট। ছাত্র-জনতা একসাথে রাস্তার নেমে স্বৈরাচার হাসিনাকে বিদায় করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা অনেক রাজনীতিক দল বাংলাদেশে দেখেছি। পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল দেখেছি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই পথভ্রষ্ট রাজনীতিক দল। আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আগামীতে এরকম পরিস্থিত যেন কোন দলের না হয় সেদিকে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, এই সরকারে যারা এসেছে, জনগণ যাদের এই গুরুদায়িত্ব দিয়েছে। এদেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে সারা বাংলাদেশকে পূর্ণরায় গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা জানি এখানে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। দেশে ন্যায় বিচারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই-সংস্কার এবং বিচার দুইটাই কিন্তু একটি চলমান প্রক্রীয়া। এটা এই রকম নয়, আমরা আজকে সংস্কার করে দিলাম, সব সংস্কার শেষ হয়ে গেল। আমরা সুবিচার করে দিলাম, সব সুবিচার আজকে শেষ হয়ে গেল। সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া এরকম নয়। এটা হচ্ছে চলমান।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকার বলতো আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। মনে আছে আপনারাদের? এটা ছিল ভুয়া কথা। আজকে কারও মুখে আমরা এটা শুনতে চাই না-আগে সংস্কার হবে, আগে বিচার হবে, পরে গণতন্ত্র হবে, পরে নির্বাচন হবে। এই কথা আজকে আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের মুখে শুনতে চাই না।
তিনি বলেন, এখন সময় হয়েচ্ছে-আমরা সৃঙ্খলভাবে একটি পরিবেশ পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি করব। যেখানে সুষ্টু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমরা ১৬ বছর ধৈর্য রেখেছি। আমরা আগামি কয়েক মাস ধৈর্য রাখব। আমরা নিয়মের বাইরে যাব না। আমরা শৃঙ্খলার বাইরে যাব না। আমরা কারও উপরে জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে দেব না। কেনো না সেটা গণতন্ত্র নয়, সেটা স্বৈরাচার। স্বৈরাচারের রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না। বিএনপি বিশ্বাস করে আইনের শাসনে। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের ভোটে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। যে যতই স্বড়যন্ত্র করুক, বাংলাদেশের মানুষের উপরে আমাদের আস্থা আছে। আগামি নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার আমাদের সুযোগ দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি ভিন্নধর্মী রাজনীতিক দল। আমরা অনেক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে দেখেছি। পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল দেখেছি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে পথভ্রষ্ট রাজনীতিক দল। এই যে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আজকে দীর্ঘ ১১ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এই ১১ মাসের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী কাউকে দেখাতে পারবেন যে সৎসাহস নিয়ে বলতে পেড়েছে- যে আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অন্যায় করেছি। আমরা ক্ষমা চাই। কেউ বলে নাই।
তিনি বলেন, আজকে সেই রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাক্ষাণ করেছে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। বিএনপি যেনো কোন দিন আওয়ামী লীগের মত এই ধরনের আচারণ না করে। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমরা রাজনীতিকে আওয়ামী লীগের মত ব্যবসা হিসেবে নেয় নাই। আমরা মানুষের সেবা করব। আমরা সেই সেবার উদ্দেশ্যে নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি। আপনারা মানুষের সেবা করবেন। মানুষে আপনাদের প্রতিদান দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বক্তব্যে পূর্বে নেতাকর্মীদের হাতে সদস্য ফরম তুলে দিয়ে এর শুভ উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট বীরমুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, শফিকুল ইসলাম শাফিক, জয়নুল আবেদন শিবলী, চন্দ্রিমা থানার থানা বিএনপি’র সভাপতি ফাহিজুল হক ফাহি, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম জনি, বোয়ালিায়া থানা (পশ্চিম) বিএনপি’র সভাপতি শামসুজ্জামান মিলু সাধারণ সম্পাদক বজলুজ্জামান মহন, বোয়ালিয়া (পূর্ব) বিএনপি’র সভাপতি আশরাফুল ইসলাম নিপু, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ও কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব মজিউল আহসান হিমেল।
আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনি, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান জনি, মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক শরফুজ্জাামান শামীম, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট রওশন আরা পপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গুলসান আরা মমতা, রোজিনা, রিতা, ক্রীড়া সম্পাদক বিথি, সহক্রীড়া সম্পাদক লাভলীসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।