নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর পবা উপজেলায় নির্মাণকাজ চলার মধ্যেই একটি সড়কের একাংশ ধসে পড়েছে। নওহাটা পৌরসভার পাকুড়িয়া এলাকায় দুই পুকুরের মাঝ দিয়ে যাওয়া সড়কটির কিছু অংশ ধসে গেছে। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে এ ঘটনা ঘটে পাকুড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ফলে বিকল্প পথে অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের, এতে করে তাদের দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। ঠিকাদারের অবহেলার জন্য সঠিক সময়ে পুকুর পাড়ের সুরক্ষা দেয়াল (প্রোটেকশন ওয়াল) নির্মাণের কাজ না করাই এই দশা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
সোমবার (৩০ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নওহাটা পৌরসভার দুয়াড়ি থেকে পাকুড়িয়া স্কুল পর্যন্ত তিন হাজার ৫৫০ মিটার সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিল। কিন্তু পাকুড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ার সংযোগস্থলে সড়কের একটি বড় অংশ ধসে গেছে। এতে পথচারী চলাচলও পুরোপুরি বন্ধ।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। পাকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাটা হওয়ার খবরে আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু সঠিক সময়ে পুকুরের পাড়ের সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণের কাজ না করাই এই দশা হলো। এখন আমাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যেতেও কয়েক কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে।’
আরেক বাসিন্দা রাশিদা বেগম বলেন, ‘আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বিকল্প যে রাস্তাটি আছে, সেটিও ভাঙাচোরা। বর্ষার মধ্যে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা আরও কঠিন। অসুস্থ রোগী বা জরুরি প্রয়োজনে গাড়ি চলার কোনো উপায় নেই। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।’
জানা গেছে, নওহাটা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের আওতায় ১০টি সড়ক নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স জুয়েল ইলেক্ট্রোনিক্স এন্ড জেভি ওয়াশিমুল হক’। এই ১০টি সড়কের দৈর্ঘ্য ১২ হাজার ৭৫০ মিটার। এই প্রকল্পের মধ্যে দুয়ারী প্রাইমারি স্কুল হতে পাকুরিয়া প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৫০ মিটার রাস্তা কার্পেটিং করার কাজ চলমান রয়েছে। ধসে পড়া সড়কটি এই প্রকল্পেরই অংশ।
কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারের আশ্বাসের পরও ভোগান্তি কমেনি স্থানীয়দের। এই বর্ষণের মধ্যে সুরক্ষা দেয়ালের কাজ শেষ হয়ে সড়কটি কবে নাগাদ পুরোপুরি চালু হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন দুই গ্রামের হাজারো মানুষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ওয়াশিমুল হক বলেন, ‘তিন হাজার মিটার সড়কের কাজ প্রায় শেষ হলেও পুকুরের ওই অংশের কাজ বাকি ছিল। সেখানে সুরক্ষা দেয়ালের কাজ চলছিল। ভারী বর্ষণের কারণে ওই জায়গার মাটি নরম হয়ে ধসে গেছে। যে অংশটি ভেঙেছে, সেটি আমরা নিজ খরচেই আবার তৈরি করে দেব।’
বিষয়টি নিয়ে নওহাটা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. তৌফিক হাসান বলেন, ‘ভারী বর্ষণে সড়কটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ঠিকাদারকে জানিয়েছি- ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি তাকেই মেরামত করতে হবে। এর জন্য পৌরসভা থেকে নতুন করে কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। সুরক্ষা দেয়ালের কাজ শেষ হলেই সড়কটি ঢালাই করা হবে।’