প্রবাহ ডেস্ক: তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা তাদের পরিবারসহ শতাধিক বাংলাদেশিকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দূতাবাসের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের জীবনের ঝুঁকি থাকায় তিনি সোমবার (১৬ জুন) রাতে নিজের বাসভবন ছেড়ে আরেকটি নিরাপদ জায়গায় ছিলেন। এসব তথ্য জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ক’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ জন্য একটি বড় অঙ্কের অর্থেরও প্রয়োজন। সেই অর্থ পাঠানোর চেষ্টা করছি। দূতাবাসে যে তহবিল আছে, সেটি দিয়ে ইতোমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চ্যান্সারি ও রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে হামলার ঝুঁকি বেশি ছিল। রাষ্ট্রদূত সোমবার (১৬ জুন) রাতে নিজের বাসা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গিয়েছিলেন।’
রুহুল আলম সিদ্দিকী জানান, তেহরানে আছেন, এমন ১০০ জনের মতো বাংলাদেশি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদেরসহ দূতাবাসে যত পরিবার আছে—তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘দূতাবাসের কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। এখনকার সিদ্ধান্ত হচ্ছে তেহরান থেকে যতটুকু দূরত্বে গেলে নিরাপদে থাকা যাবে, তারা যেন ততটুকু দূরত্বে গিয়ে থাকেন। অর্থাৎ নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়া।’
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে অর্থ পাঠানোর বিষয়টি বেশ কঠিন। তবে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য যে বাড়তি অর্থ লাগবে, সেটি আমরা পাঠানোর চেষ্টা করছি। ব্যাংকিং চ্যানেল সেখানে কাজ করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু বিমান চলাচল বন্ধ। তাই এ মুহূর্তে ইরান ত্যাগ করার কোনও ব্যবস্থা নেই। স্থলপথে হয়তো কষ্ট করে তেহরান ত্যাগ করা সম্ভব। কিন্তু সেটিও নিরাপদ নয়। এ কারণে আমরা তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশনা দিয়েছি।’ এই নির্দেশনা কার্যকর করতেও সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘১০০ জনকে রাখার মতো একটি জায়গা পাওয়া সম্ভব নয়। তাদের বিভিন্ন জায়গায় রাখতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে সরিয়ে নেওয়া যাবে না। তাছাড়া সব মিলিয়ে সেখানে একটি যুদ্ধাবস্থা বিদ্যমান।’
ইরানে বেশ কিছু সংখ্যক ভারতীয় নাগরিক আছেন। ভারত তাদের নাগরিকদের তেহরান থেকে সরিয়ে ইরানের ভেতরে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে। ভারতীয়দের একটি সুবিধা হচ্ছে তাদের ব্যাংকিং চ্যানেলের অসুবিধা নেই। পাকিস্তানি নাগরিকরা ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে নিজ দেশে যেতে পারবে। ওই সীমান্তও খোলা আছে বলে তিনি জানান।