নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র এক দিন। ঈদুল আজহা মানে আনন্দ আর কোরবানি। হালাল অর্থদিয়ে সামর্থ অনুযায়ী কোরবানির পশুক্রয় এবং নির্দিষ্ট দিনে তা আল্লার রাস্থায় কোরবানি করা সুন্নত। শহরাঞ্চলের মানুষ চকুরীসহ বিভিন্ন পেশায় ব্যাস্ত থাকায় তারা পশু জবাই খাল ছড়াতে অভস্থ নয়। তাদের ভাড়া বা অর্থচুক্তিতে কসাই নিতে হয়।
গ্রামের মানুষেরা সাধারণত নিজেদের কোরবানি নিজেরা করলেও শহরের প্রায় সবার কোরবানিতেই সহযোগিতা নেওয়া হয় কসাইয়ের। এজন্য কোরবানি ঈদে কসাইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকে। রাজশাহী শহরে অবস্থান করা কসাইরা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারেন না। ফলে পাশের উপজেলার নানা এলাকা থেকে কসাইরা ভিড় করেন নগরীতে। গ্রাম থেকে আসা এসব কসাইয়ের কারণে নগরবাসীর সুবিধা হয়। তবে অনভিজ্ঞ এসব কসাইয়ের দ্বারা পশু জবাই ও মাংস কাটাকাটিতে আছে ঝুঁকিও।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই অনেক শ্রমিক, দিনমজুর ও রিকশাচালক নিজেদের পেশা ছেড়ে বিভিন্ন পশুর হাটে এসে বেপারীদের সঙ্গে কাজ করছেন। একই সঙ্গে যারা কোরবানির পশু কিনছেন তাদের সঙ্গে চুক্তি করছেন কসাইয়ের কাজের জন্য।
নগরীর সিটি গরুর হাটে দেখা হয় কামাল নামের এক কসাইয়ের সাথে। সে পেশায় রিকশাচালক, এসেছেন জেলার তানোর থেকে। তিনি বলেন, সে সহ তার গ্রামের ৫ জন গত ৪ বছর ধরেই কোরবানির ঈদে শহরে আসে গুরু জবাইয়ের কাজ করতে। তিন দিনে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা ইনকাম হয়।
মৌসুমি কসাই আব্দুল জব্বার এসেছেন নওগাঁ থেকে। তিনি বলেন, দুই দিন হাটে কাজ করবো। গরু গাড়িতে উঠানোসহ ক্রেতাদের বাড়ি পৌঁছাতে সহযোগিতা করবো। এরপর ঈদের দিন থেকে যাদের সঙ্গে চুক্তি হবে তাদের বাড়ি গিয়ে গরু জবাইয়ের কাজ করবো।
নগরীর রেলগইটে হাতে ছোরা চাকু দাড়ীয়ে থাকা মামুন কাশেম নামের দুজন মৌসুমী কসাইয়ের সাথে কথা হয়।
তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। এসেছেন চাঁপাই নবাবগঞ্জের কানসাট থেকে। তারা বলেন, আমরা প্রতি কোরবানি ঈদে হাটের শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত গরুর খড় বিক্রি করি। এরপর আমাদের ছয়জনের একটি গ্রুপ আছে, সবাই মিলে ঈদের দিন থেকে পরবর্তী তিন দিন কসাইয়ের কাজ করি। ইনকাম ভালোই হয়।
একটি গরু জবাই থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কত টাকা নিয়ে থাকেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কোনো রেট নেই। গত বছর একটি গরু জবাই থেকে সব কাজ শেষ করতে, গরুর সাইজ ভেদে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকায় কাজ করেছি।
স্থানীয় কিছু কসাইয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগরীতে যে পরিমাণ গরু জবাই হয় এতে স্থানীয় কসাই দিয়ে তা শেষ করা সম্ভব হবে না। এতে মৌসুমি কসাই প্রয়োজন। তারা নিজেরা গ্রাম থেকে লোক নিয়ে আসে। তবে কোরবানি ঈদে মৌসুমি যে কসাইরা আসে তারা বেশির ভাগই এ পেশার সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা কোরবানির মাংস কাটাকাটিতে অদক্ষ। একারনে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে বেশি। পশুর চামড়াও নষ্ট হয়।