রবিবার | ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ খবর :
ছাত্রদলকে ডাকসুতে মনোনয়নপত্র ক্রয় করতে না দিতে মব হচ্ছে : রিজভী চিকিৎসা শেষে ফিরলেন মির্জা ফখরুল, সংকট নিরসনের একমাত্র পথ দ্রুত নির্বাচন আনুষ্ঠানিক দা‌য়িত্ব নিলেন পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারকে সহযোগিতা দিতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত : সেনাপ্রধান আরএমপি’র অভিযানে ইয়াবা, অ্যালকোহল ও চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার ৪ চলতে চলতে থেমে যাচ্ছে রেলের ইঞ্জিন, স্পেয়ার পার্টসের অভাবে বিঘ্ন রেল চলাচল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনের বিকল্প নেই : তারেক রহমান ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বদলে কী কী চান পুতিন হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য, বদরুদ্দীন উমর, মাহমুদুর ও নাহিদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত রাজশাহীতে সেনাবাহিনীর অভিযান, অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার
ঢাবিসহ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন নওহাটার সুমনা

ঢাবিসহ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন নওহাটার সুমনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বাবা হারা মেয়ে সুমনা খাতুন। ছোট বেলা থেকেই নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শ্রেণিতে মেধার প্রকাশ ঘটিয়ে এসেছেন সুমনা। তারা দুই বোন। এরমধ্যে বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। বাবা কামরুজ্জামান জামাল নওহাটায় একটি হোমিওপ্যাথি দোকানে ডাক্তারকে সহায়তার চাকরি করতেন।

নওহাটা নতুনপাড়ার বাসিন্দা ২০০৯ সালে বাবা মারা গেলেও ভেঙ্গে পড়েননি মা আঞ্জুয়ারা খাতুন। তিনি নওহাটা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে খন্ডকালীন আয়াপদে চাকরি করেন। লেখাপড়ার প্রতি সুমনার অদম্য ইচ্ছা দেখে মা অভিভুত হন। তার স্বপ্ন সমুনা যেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। সুমনার লেখাপড়ার সমস্ত খরচ তিনিই বহন করেন। সুমনাদের বাড়ি ছাড়া অর্থ উপার্জনের অন্য কিছু না থাকলেও আত্ম সম্মানের দিক দিয়ে অনেকের চাইতে ওপরে। এই প্রতিবেদন লেখার আগেই প্রতিবেদকের কাছে শর্ত ছিল অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার বিষয়টি না টানতে।

সুমনা ২০২২ সালে নওহাটা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে গোল্ডেন এ প্লাস পান। এতে স্কলাপশীপ ছিল। ২০২৪ সালে ঐতিহ্যবাহি রাজশাহী কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে গোল্ডেন এ প্লাস পান। এখানেও স্কলারশীপ পান। এই বর্ণিল ফলাফল নিয়ে সুমনা ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দেন। এর আগে তার শিক্ষাজীবনের কোনও পরীক্ষাতেই খারাপ কিংবা অকৃতকার্যের ইতিহাস নেই।

সুমনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সি ইউনিটে ৩৭তম স্থান অধিবকার করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরিট পজিশন-৫৭তম এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরিট পজিশন-৫৩তম। সুমনার এই সাফল্যে আনন্দিত হয়েছেন তার মাধ্যমিকের শিক্ষকমণ্ডলী, আত্মীয়স্বজন, পরিচিত ব্যক্তিবর্গ, শুভাকাঙ্খি ও এলাকাবাসী।

অর্থনৈতিক টানাপোড়ন থাকলেও সুমনার শৈশব ও কৈশোর ভালই কেটেছে। সমুনা এই প্রতিবেদককে জানান, আমার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চান্স পেয়ে ভাল লাগছে। আল্লাহর রহমতে এবং সকলের দোয়ায় আমি কৃতকার্য হয়েছি। অন্তত একটিবারের জন্য হলেও খুশি করতে পেরেছি মাধ্যমিকের শিক্ষকমণ্ডলী, আত্মীয়স্বজন, পরিচিত ব্যক্তিবর্গ, শুভাকাঙ্খি ও এলাকাবাসীকে।

ভবিষ্যতে কি হতে চান-এমন প্রশ্নের জবাবে সুমনা বলেন, প্রথমত মানুষ। তারপর লেখাপড়া শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। আমার মেধা, পারদর্শীতা, দক্ষতা-সর্বোপুরি যোগ্যতার ওপর নির্ভর করবে আমার ভবিষ্যত। তবে মানুষকে প্রত্যেক্ষভাবে সেবা করা যায়-এমন জবই খুঁজবো। তিনি সংশিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তবে সবচেয়ে বেশী অবদান রাখেন তার মা আঞ্জুয়ারা খাতুন, নওহাটা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামসুদ্দীন প্রামানিক, শিক্ষক মো. শাহীন আলীসহ সকল শিক্ষকমন্ডলী, রাজশাহী কলেজের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকবৃন্দ।

তার ভাল ফলাফলের কারণ কি জানতে চাইলে সুমনা বলেন, ‘আমি রুত্বের সাথে বিষয়গুলো বুঝেছি এবং জেনেছি। আমি আমার পড়াগুলোর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আর প্রতিদিনের লেখাপড়া প্রতিদিনই করেছি। কোন কারণে আমার পড়া না হলে-আমার কাছে অস্বস্তি লাগে। শেষে সুমনা ভাল লেখাপড়া করার জন্য সকলের কাছে দোয়া চান। পাশাপাশি সুমনা সকলের সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করেন।


ads



©2022 newsprobaha.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.