প্রবাহ ডেস্ক: গরমকাল মানেই ফলের রাজা আমের আগমন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রুত মুনাফা লাভের আশায় কৃত্রিমভাবে আম পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড নামক এক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করেন। এই ক্যালসিয়াম কার্বাইড মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর ঝুঁকির কারণ। শুধু তাই নয় বাণিজ্যিক ক্যালসিয়াম কার্বাইডে প্রায়শই আর্সেনিক এবং ফসফরাস হাইড্রাইডের মতো বিষাক্ত উপাদানের অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে।
১. তাৎক্ষণিক প্রভাব
# মুখ, নাক ও গলায় জ্বালাপোড়া: কার্বাইড থেকে তৈরি অ্যাসিটিলিন গ্যাসের সংস্পর্শে এলে মুখ, নাক এবং গলায় জ্বালাপোড়া হতে পারে, এমনকি কফ ও শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে।
# পেটের সমস্যা: কার্বাইড দিয়ে পাকানো আম খেলে পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং হজমের অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
# মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা: অ্যাসিটিলিন গ্যাস স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, এমনকি দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।
# ত্বকের সমস্যা: কার্বাইডের সরাসরি সংস্পর্শে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে।
২. দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
# স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি: দীর্ঘ সময় ধরে বা অধিক মাত্রায় অ্যাসিটিলিন গ্যাস এবং কার্বাইডে থাকা আর্সেনিক ও ফসফরাসের যৌগ শরীরে প্রবেশ করলে স্নায়ুতন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে স্মৃতিশক্তি লোপ, হাত-পা কাঁপা, মনোযোগের অভাব, এমনকী মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
# লিভার ও কিডনির সমস্যা: কার্বাইডে থাকা বিষাক্ত উপাদান, বিশেষত আর্সেনিক, লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে।
# ক্যানসারের ঝুঁকি: আর্সেনিক একটি পরিচিত কার্সিনোজেন অর্থাৎ সৃষ্টিকারী পদার্থ। দীর্ঘমেয়াদী ভাবে আর্সেনিকের প্রভাবে ফুসফুস, ত্বক এবং অন্যান্য অঙ্গে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
# অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও শিশুদের জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ: অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তাদের কার্বাইডের বিষক্রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।