নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী নগরীতে গীর্জার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টাকারী কথিত ঈসা নবী দাবি করা এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে আরএমপি সদরদপ্তর সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক এসব তথ্য জানান।
এর আগে, রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নিজেকে ঈসা নবী দাবি করা ওই ব্যক্তির নাম গোলাম চৌধুরী (৩৪)। তিনি নগরীর চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রাম নিউ কলোনীর মৃত কুদ্দুস চৌধুরীর ছেলে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, রোববার সকাল আনুমানিক পৌনে ৭টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নগরীর উত্তম মেষ পালক গির্জার প্রার্থনাস্থলে লাল কাপড়ে মোড়ানো একটি ব্যাগ গোপনে রেখে চলে যায়। গীর্জার সিস্টার শান্তির বিষয়টি সন্দেহ হলে ব্যাগ খুলে সেই লাল ব্যাগের মধ্যে একটি পবিত্র কোরআন শরীফ দেখতে পান যে। বিষয়টি তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। এর প্রেক্ষিতে কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে আরএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (কাশিয়াডাঙ্গা) বিভূতি ভুষণ বানার্জীর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে সহকারি পুলিশ কমিশনার (কাশিয়াডাঙ্গা) আরিফুল ইসলাম, কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মশিউর রহমান ও মহানগর ডিবির পুলিশ পরিদর্শক আশিক ইকবাল উক্ত ব্যক্তিকে সনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেন।
এদিকে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে সেই ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সেই ব্যক্তির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, বড় দিনের ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা, ধর্মীয় পবিত্রতা বিনষ্ট করা এবং দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টির করতে আসামি উত্তম মেষ পালক গীর্জায় পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে আসে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি গোলাম চৌধুরী নিজেকে কথিত ঈসা নবী বলে দাবী করেন। এছাড়াও তার উপর প্রতিনিয়ত ওহি নাজিল হয় বলে সে স্বীকার করে।
গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান আরএমপি কমিশনার