বৃহস্পতিবার | ১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ খবর :
বিএনপি-সরকারের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সব দলই বিব্রত: জামায়াত ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে সরাসরি যুক্ত না হতে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কতা সংলাপে জামায়াতকে ‘বেশি কথা বলতে দেওয়ায়’ সিপিবি-গণফোরামের ওয়াকআউট রাজশাহীর পদ্মা নদীর বাঁধ ঘিরে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করলো প্রশাসন আপনি বিদেশে বসে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে যা বললেন শি জিনপিং সীতাকুণ্ডে সর্বোচ্চ ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফর অত্যন্ত সফল : ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রাতের মধ্যে ঢাকাসহ ১৮ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস জোড়া সেঞ্চুরিতে স্বস্তি নিয়ে দিন পার করল বাংলাদেশ
সরকারি হাসপাতাল পরিচ্ছন্নের কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার পরিকল্পনা

সরকারি হাসপাতাল পরিচ্ছন্নের কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার পরিকল্পনা

প্রবাহ ডেস্ক: সরকারি হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগের কমতি নেই। চিকিৎসাসেবার সঙ্গে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আছে নানা অভিযোগ। গবেষণা বলছে, সরকারি হাসপাতালের ব্যবহার উপযোগী টয়লেট বেশির ভাগই অপরিচ্ছন্ন। কিছু কিছু হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ নিলেও পর্যাপ্ত লোকবল এবং তদারকির অভাবে তা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। সরকারি হাসপাতালের সেবার মান বাড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তাই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এই কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আগামী অর্থবছর থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আর জনবল নিয়োগ না দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

গত বছর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর.বি) তাদের এক গবেষণার তথ্য প্রকাশ করে জানায়, রাজধানী ঢাকার সরকারি হাসপাতালের ৩২ শতাংশ টয়লেট ব্যবহার উপযোগী নয়। এছাড়া, ব্যবহার উপযোগী ৬৮ শতাংশ টয়লেটের ৬৭ শতাংশই অপরিচ্ছন্ন। গবেষণার জন্য নির্বাচিত ১২টি হাসপাতালের মধ্যে দুটি সরকারি জেনারেল হাসপাতাল, দুটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ছয়টি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও দুটি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলো প্রায়শই তাদের রোগীর সেবাদানের ক্ষমতা (যেমন উপলব্ধ শয্যা সংখ্যা, অপেক্ষা করার জায়গা এবং পরিচারকদের জন্য জায়গা) ছাড়িয়ে জনাকীর্ণ সমস্যার মুখোমুখি হয়। এই প্রবণতা স্বাস্থ্যবিধি অবকাঠামো এবং অপর্যাপ্ত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ স্যানিটেশন সুবিধায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অধিকন্তু, ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে ঢাকার বড় হাসপাতালগুলোতে নির্ধারিত আইপিসি প্রোটোকল বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে সীমিত ওয়াস সুবিধার সঙ্গে এই ঘিঞ্জি পরিস্থিতি সংক্রামক রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত মার্চ মাসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিছন্নতার বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা এবং সেবাদানকারী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা পেশাদার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবের কথা জানান। আবার যারা আছেন তারাও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না বলেও জানান তারা।

সভায় উপস্থিত একাধিক হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালকে (সিএমএইচ) মডেল ধরে অনুকরণ করার প্রস্তাব করা হয়। সেখানে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তদারকি করায় সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে বলে জানানো হয়। তবে তাদের মধ্যে দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই প্রসঙ্গে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সভার নথি থেকে জানা যায়, সভায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সব হাসপাতালে পেশাদার পরিচ্ছন্নকর্মী সংকট। যারা আছেন তারাও ঠিকভাবে কাজ করেন না। সংকট দূর করতে প্রচলিত বিধিবিধানের আলোকে আউটসোর্সিং করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।

সভায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মীর সারোয়ার হোসাইন চৌধুরী জানান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তদারকি না থাকলে স্থায়িত্ব কমে যায়। হাসপাতালের ভেতরের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি বাইরের দিকেও তদারকি করা দরকার। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হলেও বর্তমানে কর্মরতদের বাদ দেওয়া যাবে না।

এসময় বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, আমরা সার্ভিস আউটসোর্স করে কাজ শুরু করে দিতে চাই। আমরা সারা দেশে সিএমএইচের মতো একইরকম সেবা দেখতে চাই। কেউ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সভায় আগামী অর্থবছর থেকে সেবা আউটসোর্স করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে আগামী অর্থবছর থেকে আউটসোর্স করে আর কর্মী না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুগ্ম সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আগে পরিচ্ছন্নতাকর্মী স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। পরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু তাতেও খুব একটা ফলাফল পাওয়া যায়নি। কারণ তদারকির অভাব আছে। হাসপাতালের পরিবেশ নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। সেগুলো সমাধান করতে সেবা আউটসোর্স করার কথা ভাবা হচ্ছে। এটা নিয়ে অর্থ বিভাগ কাজ করছে। তারাই নিয়োগ দেবে।


ads



©2022 newsprobaha.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.