প্রবাহ ডেস্ক: আগামী ১০ জুন ঢাকায় বাংলাদেশের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। সেই ম্যাচের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ দল ৪ জুন ফিফা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। মূল প্রতিযোগিতার আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়া, সমন্বয় ও কৌশল পরিকল্পনা পরখ করতেই মূলত এই ম্যাচ। বাফুফে প্রথমবারের মতো অনলাইন টিকিটিংয়ে প্রবেশ করছে। ৪ জুন ম্যাচের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম পেছনে রেখে উল্টো ১০ জুন দিয়েই শুরু করছে বাফুফে।
আজ বাফুফের কম্পিটিশন কমিটি আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হোম ম্যাচের টিকিটের দাম ও বিক্রির প্রক্রিয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নে ফেডারেশন কর্মকর্তা ও বাফুফের টিকিটিং পার্টনার টিকিফাই বেশ কয়েক দফায় উত্তর দিতে গিয়ে আটকেছে। সেই বিষয়গুলো বেশ সহজেই ৪ জুন ম্যাচের টিকিট অনলাইনে বিক্রির মাধ্যমে টিকিফাই ও বাফুফে উভয়পক্ষের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ ছিল। এরপর সিঙ্গাপুর ম্যাচে সে অনুযায়ী প্রয়োগ করলে ভোগান্তি বা সংকটের মাত্রাও কম হতে পারত।
বাফুফে হাঁটছে উল্টো পথে, ১০ জুন সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য ২৪ মে দুপুর ১২টা থেকে টিকিট ছাড়তে যাচ্ছে তারা। ৪ জুন প্রস্তুতি ম্যাচের টিকিটের বিষয়টি এখনও পুরোপুরি চূড়ান্ত হয়নি। বাফুফের নির্বাহী সদস্য ও কম্পিটিশন কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমরা ৪ জুনের ম্যাচের টিকিটও অনলাইন মাধ্যমে করতে চাই। টিকিফাইয়ের সঙ্গেই আলোচনা চলছে। সেই ম্যাচে গ্যালারির টিকিট থাকবে ২০০ টাকা।’ বাফুফে নির্বাহী কমিটির কয়েকজনের মতে, ৪ জুনের ম্যাচের অনলাইন কার্যক্রমই আগে শুরুর প্রয়োজন ছিল।
১০ জুন সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। সেই ম্যাচের টিকিট খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা। দুই সপ্তাহ আগে ওই ম্যাচের টিকিট ছাড়লেও ৪ জুনের জন্য বাফুফে এখনও সেভাবে প্রস্তুতি নেয়নি। অথচ বাফুফে ৪ জুনের ম্যাচ দিয়ে খুব সুন্দরভাবেই অনলাইন টিকিটের কিছু ট্রায়াল দিতে পারত। সেই ম্যাচে হামজা-ফাহমিদুলদের খেলার সম্ভাবনা থাকায় দর্শকদের আগ্রহও রয়েছে। অনলাইনে টিকিটের জন্য নিবন্ধন, পেমেন্ট সিস্টেম, দর্শকদের চাপসহ অনেক বিষয়ে বাফুফে ও টিকিফাই দুই পক্ষই বাস্তব ধারণা পেত। এ নিয়ে টিকিফাইয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ‘এটা আসলে বাফুফের সিদ্ধান্ত। তারা যেভাবে নির্দেশনা প্রদান করবে আমরা সেভাবেই করব।’ ১০ জুন ম্যাচের টিকিট দুই সপ্তাহ আগে ছেড়ে বাফুফেই বাড়তি চাপে থাকতে পারে। টিকিট অতি দ্রুত শেষ হয়ে গেলে না পাওয়া সমর্থকদের ক্ষোভ তখন বাফুফের ওপরই এসে পড়বে। ম্যাচ ও দল ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি তখন এটি বাড়তি একটি ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়ানোর শঙ্কা রয়েছে।
ফুটবলপ্রেমীদের কাছে টিকিট একটি স্যুভেনিরও। বিশ্বকাপ এমনকি বাংলাদেশের অনেক খেলার টিকিটও দর্শকরা স্যুভেনির হিসেবে রাখেন। ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে সেই সুযোগ অবশ্য থাকছে না সাধারণ দর্শকদের। অনলাইনে টিকিট নিশ্চিতের পর মোবাইল ডিভাইসে প্রদর্শন করে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে হবে। এ নিয়ে টিকিফাইয়ের কর্মকর্তা ইফতেখার ইফতির মন্তব্য, ‘আসলে সব সিস্টেমে কিছু না কিছু প্রস এন্ড কন (সুবিধা-অসুবিধা) থাকে। সেটা মেনেই চলতে হবে। আমরা দর্শকদের যতটা সম্ভব স্মুথলি টিকিট কাটা এবং স্টেডিয়ামে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করব।’
বাফুফে কর্তারা সংবাদ সম্মেলনে ২৪ মে দুপুর ১২টা থেকে সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দিয়েছিল। সেই ঘোষণার দুই ঘণ্টা পর পাওয়া গেল ভিন্ন তথ্য। বাফুফে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিভিন্ন ক্যাটাগরির টিকিটের দামের পাশাপাশি উল্লেখ করেছে শুক্রবার ২৩ মে (কিছুক্ষণ পর অবশ্য ফেসবুক পেজে এডিট করে ২৪ মে করা হয়েছে) থেকে বিক্রি শুরু হবে। কখন এবং কোন ওয়েবসাইটে বিক্রি হবে এটা আগামীকাল জানানো হবে। যা বাফুফের সমন্বয়হীনতা ও অপেশাদারিত্বের অন্যতম উদাহরণ।