প্রবাহ ডেস্ক: মাঝেমধ্যেই নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এমন সব তথ্য যা চমকে দেওয়ার মতো। কখনও সেগুলি সত্যি হয়, কখনও বা তার নেপথ্যে থাকে নিছক বুজরুকি। তেমনই একটি তত্ত্ব ভাইরাল হয়েছে ইনস্টাগ্রামে- নারকেল তেল দিয়ে ভাত রান্না করলে নাকি রক্তে শর্করার মাত্রা কমানো যেতে পারে। কতটা সত্যি এই ধারণা?
এই ধারণার নেপথ্যে রয়েছে প্রতিরোধী শ্বেতসার নামে এক ধরনের শর্করা। এটি এমন এক ধরনের শ্বেতসার যা আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রে সহজে হজম হয় না। পরিবর্তে, এটি বৃহৎ অন্ত্রে চলে যায় এবং সেখানে গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাচিত হয়। অর্থাৎ এই শর্করা অনেকটা ডায়েটারি ফাইবারের মতো কাজ করে। প্রতিরোধী শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবার সাধারণত রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায়, অর্থাৎ এদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম।
শ্রীলঙ্কার কলেজ অফ কেমিক্যাল সায়েন্সেসের একটি গবেষণায় এই তত্ত্বটি জনপ্রিয়তা পায়। এই তত্ত্ব অনুযায়ী ভাত রান্নার সময় নারকেল তেলের মতো লিপিড (চর্বি) যোগ করলে এবং পরে ভাত ঠান্ডা করলে, ভাতের শ্বেতসারের রাসায়নিক গঠনে পরিবর্তন আসে। মনে করা হয়, নারকেল তেল রান্নার সময় শ্বেতসারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। ফলে হজমযোগ্য শ্বেতসারের একাংশ প্রতিরোধী শ্বেতসারে রূপান্তরিত হয়। এই ভাত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে অনেকটা বেড়ে না গিয়ে, ধীরে ধীরে বাড়ে।
কিন্তু এই তত্ত্ব এখনও বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত নয়। নারকেল তেল ও ডায়াবেটিস নিয়ে সরাসরি গবেষণা সীমিত। কিছু ছোট গবেষণায় দেখা গিয়েছে নারকেল তেল ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে, তবে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় নারকেল তেলের প্রভাব নিয়ে মানুষের উপর খুব বেশি গবেষণা হয়নি। কাজেই এই দাবির স্বপক্ষে আরও বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রয়োজন।