শুক্রবার | ১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ খবর :
রাবিতে শিক্ষকের অনৈতিক সম্পর্ক, শিক্ষার পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ

রাবিতে শিক্ষকের অনৈতিক সম্পর্ক, শিক্ষার পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ

প্রবাহ ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ এক ছাত্রীসহ আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। ঘটনাটি ঘটে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার দিন গত ১১ মে (রোববার) সন্ধ্যায় এবং ১৪ মে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

রাবির শিক্ষার্থীদের একাধিক সূত্র বলছে, ১১ মে বিকেল ৫টার দিকে হেদায়েত উল্লাহ ফাইন্যান্স বিভাগের এক ছাত্রীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন। কক্ষে প্রবেশের পর তিনি বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে দেন। দীর্ঘ সময় পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সন্দেহ হওয়ায় কয়েকজন শিক্ষার্থী দরজায় কড়া নাড়েন। কিছুক্ষণ পর দরজা খুললে শিক্ষার্থীরা কক্ষে প্রবেশ করে ওই ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা যখন মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ শুরু করেন, তখন হেদায়েত উল্লাহ ছাত্রীটির মাথায় একটি রুমাল পরিয়ে দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘‘সে মেয়ে মানুষ, তাই।’’ কক্ষে ছাত্রী-শিক্ষককে একসঙ্গে পাওয়া ও ছাত্রীর পরনের ওড়না ও অন্যান্য সামগ্রী টেবিলে থাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।

মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ নামক আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তিনি আগেও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
অপরদিকে, সংশ্লিষ্ট ছাত্রী একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর (এমবিএ) শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক।

বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. শিবলী সাদিক বলেন, “মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে এর আগে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়েছিলেন। সে সময় বিভাগের তৎকালীন সভাপতি বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। তবে বর্তমান ঘটনাটি আমি জানি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, “আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। খোঁজ নিচ্ছি। আগে জানতে হবে আসলে কী ঘটেছে, তারপর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ক্যাম্পাসজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী বিষয়টি তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বিশ্লেষক ও শিক্ষক সমাজ বলছেন, শিক্ষাঙ্গনে এমন অনৈতিক সম্পর্ক ও আচরণ শিক্ষার পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে।


ads



©2022 newsprobaha.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.