নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। জনগণের জন্য রাজনীতি করে। বিএনপি এটা বারবার প্রমাণ করেছে। কারন বিএনপি’র জন্মই হয়েছিল এই দেশের মানুষের প্রয়োজনে। বিএনপি লড়াই সংগ্রাম করেছে, সংকটের সংগ্রামের জনগণের পাশে ছিল বলেই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হল বিএনপি। বিগত ১৭ বছর বিএনপি পার করেছে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এই বিএনপিকে ধ্বংস এবং খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। তারেক রহমানকে মেরে ফেলার জন্য চেষ্টা করা হয়েছিলো কিন্তু পারেনাই। সোমবার বিকেলে নগরীর কোর্ট স্টেশন রাস্তার উপরে কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপি আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগের দাত্বিপ্রাপ্ত সমন্বয়ক বীর মুুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম এই কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, আপনার দেখেছেন আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি’র আএমন কোন নেতা কর্মী নাই যাদের উপর অত্যাচার করা হয় নাই, জেলে পড়া হয় নাই। বিএনপি’র অনেক নেতা কর্মী আছেন যাদেও এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায় নাই। তারপরও ৫ই আগস্টে শেখ হাসিনাকে বিদায় করার পরে এখনো বিএনপি ধৈর্য্য ধরে বসে আছে। তিনি বলেন, যে বিএনপি আজকের সম্মেলন করছে মুক্ত পরিবেশে, ওপেন মঞ্চে, অনেকে বিএনপিকে বিভিন্নভাবে সমালোচনা করেন, যে বিএনপি নাকি গণতন্ত্রই চায় না। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। এটা কি গণতন্ত্র ধ্বংস? না যারা বলেন, নির্বাচন দরকার নাই, তারা কি গণতন্ত্র বিশ্বাস করেন? তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে তা বলতে পারতো না। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন না বলেই আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। এরকম পতন ১৯৭৫ সালেও হয়েছিলো।
প্রধান অতিথি বলেন, এইবার আওয়ামী লীগের নির্মমভাবে পতন ঘটেছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ৫আগস্টেই হয়ে গেছে। জনগণের ভয়ে পিছনের দরজা দিয়ে হাসিনা পালিয়ে গেছেন। তবে শেখ হাসিনা পালালেও এখনো বাংলাদেশের ক্ষমতায় আছে তার দোসররা। বর্তমান সরকার তাদের বিরুদ্ধে এখনো পদক্ষেপ নিতে পারেনাই। ৫ আগস্ট এর পরে তারেক রহমান একবার আওয়ামীলীগ ও তার দোসরদের উচিৎ শিক্ষা দেয়ার যদি হুকুম দিতেন তাহলে বাংলাদেশের রক্তের হোলি খেলা হত। তিনি তা না করে সবাইকে ধর্য্যধারণ করার আহ্বান জানান। কারন বিএনপি গনতন্তকে বিশ্বাস করে।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে রাজাকার বলতেও ছাড় দেয়নাই খুনি হাসিনা ও দলের নেতারা। বেগম জিয়াকে নিয়ে নানা কটুক্তি করতেন হাসিনা ও দোসররা। তারেক রহমানকে দেশে আসতে দেয়নি। কারন তারেক রহমানকে ভয় পেতেন খুনি হাসিনা। সে সময়েও দেশে হাসিনা নির্বাচন দিতে ভয় পেতেন। এখনো সেই অবস্থা আবারও সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় বিএনপি’র সাথে জনগণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ক্ষমতা বা পদ কারোই চিরদিন স্থায়ী হয়না। তারও হয়নি। তরুনদের পদ ছেড়ে দিতে হবে। যারা সিনিয়র তাদের আরো উপরে যেতে হবে বলে উল্লেখ করে।
তিনি বলেন, কে এমপি, কে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কে সিটি মেয়র, কে উপজেলা চেয়ারম্যান হবেন তার নমুনেশন দেবেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এজন্য দলের মধ্যে বিভেদ না করে একসাথে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান। সেইসাথে যারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অরাজকতা, দলবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্ম করবে দল তাদের বেছে বেছে ছুঁড়ে ফেলে দেবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে জনগণ শান্তিতে থাকে। রাতে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারে। এজন্য ধর্মব্যবসায়ী ও চাটুকার মার্কা সব নতুন নতুন দলের কথায় কান না দিয়ে জনগণের পাশে থেকে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, দলের কমিটির পদ না পেলেও বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সবাইকে মূল্যায়ন করা হবে। শেষে তিনি কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনা করেন। অত্র থানার সভাপতি হলেন সদস্য সাবেক আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হলেন, সদস্য সাবেক দস্য সচিব মজিউল আহসান হিমেল।
নবনির্বাচিত সভাপতি মাইনুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মজিউল আহসান হিমেল এর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপি রাজশাহী মহানগর শাখার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, শফিকুল ইসলাম শাফিক ও বজলুল হক মন্টু।
আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রোজিনা ও রিতা, বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) বিএনপি সভাপতি আশরাফুল ইসলাম নিপু, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, চন্দ্রিমা থানার থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক ফাহিজুল হক ফাহি, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম জনি, বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক বজলুজ্জামান মহন, মতিহার থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব আল-মামুন বাবু, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন ও সিনিয়ির যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনি সহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে শুরুর পুর্বে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন- ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলন চলাকালীন সসময়ে সবার সম্মতিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাাচিত করা হয়।