প্রবাহ ডেস্ক: রাজশাহীর বিএনপিতে নীতি-আদর্শ পরিপন্থি অপ-তৎপরতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রোববার বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর গ্রেটার রোডস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র অন্তর্গত বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু।
তিনি বলেন, বিগত সকল প্রকার আন্দোলন সংগ্রামে তারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। এ কারনে তারা জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। রাতের পর রাত, দিনের পর দিন তারা বাড়িতে ঘুমাতে পারেন নি।
তিনি আরো বলেন, গত বছরের জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। সেইসাথে তার দোসরাও অনেকে পালিয়ে গেছেন। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে ৩১ দফার একটি রুপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরা হয়। কিন্তু এখনো ফ্যাসিবাদের দোসরা পুণরায় দেশকে অস্থিতিশীর করে তুলতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ রাজশাহী মহানগর বিএনপি আওয়ামী লীগসহ ঐ দলের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের জন্য প্রত্যক্ষভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। ঐ সকল নেতাকর্মী তারা চাঁদাবাজী, হত্যা ও জুলাই- আগস্টে ছাত্র-জনতার উপরে সরাসরি হামলার সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাজশাহীতে আওয়ামীলীগের যোগ সাজসে চলছে বিএনপি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বর্তমান মহানগর কমিটি বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের বিএনপির কমিটির নামে আওয়ামী লীগের চিহিৃত সন্ত্রাসীদের অর্থের বিনিমিয়ে পদ দিচ্ছেন। এর দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ হচ্ছে রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আওতাধীন রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজান, সাধারণ সম্পাদক,সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায় শাহীন আহমেদ, মাহমুদল হক রুবেল, হারুনুর রশিদ( সাবেক জাসদ নেতা), আব্দুর রাজ্জাক হয়েছেন ( সাবেক জাতীয় পার্ঠি নেতা) এবং একই কমিটির সাবেক সদস্য বদরুদ্দোজা বদর বিগত আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন মতাদর্শ যেমন জাসদ, জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো।
শুধু তাই নয় মিজান ও আমিনুল বিগত সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ ও সিটি নির্বাচনে সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোসহ দলীয় ভূমিকা পালন করেছেন। শুধু তাইনয় বিগত সরকারের আমলে যখন তারা মামলা হামলায় জর্জরিত তখন বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়কগণ নির্বিঘ্নে ঘুরে রেড়াতেন। কারন তাদের নামে সে সময়ে কোন প্রকার মামলা হয়নি। তারা মুলত আওয়ামী লীগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং যোগসাজস করে চলতেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বৃটিশ কাউন্সিল দখল করে বসে আছেন। অথচ এটা নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন বিএনপি’র বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি মোটর মালিক সমিতি মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন দখল করে নিয়েছেন। এছাড়াও তাদেরই নেতৃত্বে চলছে খুন, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্ম। খুনিদের নামে মামলা হলেও পুলিশ তাদের নির্দেশে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেনা বলে জানান তিনি। কিছুদিন পূর্বে রাজশাহী মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাড়িতে হামলা, গান পাউডার দিয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করেন রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ পারভেজ পিন্টুসহ আরো অনেকে। তাদের নামে মামলা হলেও দল থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উপরোন্ত তাদের আহ্বায়ক থেকে সভাপতি, সদস্য সচিব থেকে সাধারণ সম্পাদক করে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
এখানে সকল ত্যাগিরা উপেক্ষিত হচ্ছে। আগামীতে আর এরকম ভাবে আর কোন কমিটি গঠন করতে দেয়া হবেনা। এই বতর্মান কমিটির কার্যকলাপ বিএনপি’র উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরা হলেও অজ্ঞাত কারনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দলকে বাঁচাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের মহাসচিবসহ দলীয় সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম স্থায়ী কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক কমিটির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রাজপাড়া থানার সাবেক সভাপতি শওকত আলী, মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনসার আলী, শাহমখদুম থানার সাবেক সভাপতি মাসুদ, বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন দিলদার, শাহমখদুম থানার সাবেক সধারণ আব্দুল মতিন, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, মতিহার থানা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খাজদার আলী, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট ও মহানগর যুবদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু। এছাড়াও বিভিন্ন ও ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ ও বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্টনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।