শুক্রবার | ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমদ খানের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী

বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমদ খানের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রা.বি) শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার সাবেক কিউরেটর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমদ খানের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী ১২ নভেম্বর। মনসুর আহমদ খান রা.বি’র মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মিউজিয়াম শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার কিউরেটর পদে কর্মরত থাকাকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০০২ সালের ১২ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এ উপলক্ষে ঢাকাস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মরহুমের কবরে পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ঢাকাস্থ বাসভবনে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রয়াত মনসুর আহমদ খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থাতেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ করেছেন চাঁদপুর-ফেনী-চট্টগ্রামে। রণাঙ্গনের অসম সাহসী যোদ্ধা মনসুর আহমদ খান স্বাধীনতার পর চাঁদপুর কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ইত্তেফাকের জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক ইত্তেফাক এর রোকনুজ্জামান খানের (দাদা ভাই) বিশেষ দূত হিসেবে কচিকাঁচার শাখা গঠন করতে তিনি রাজশাহীতে এসে এখানকার গণমানুষের সাথে মিশে মুগ্ধ হন।

মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম তৈরির আদর্শ স্থান মনে করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে। তিনি প্রবলভাবে বিশ্বাস করতেন মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণ অবয়ব মিউজিয়ামে সংগ্রহ করলে ৭১-র প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বেড়ে ওঠবে। সে-উদ্দেশ্যে উদ্যেগী হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৯৭৬ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠা করে দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ মিউজিয়াম, যার নাম দেয়া হয়, ‘শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা’।

প্রতিষ্ঠার দিনই বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমদ খান, রা.বি’র ‘শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা’য় যোগদান করেন এবং মৃত্যুঅবধি পরম মমতায় আগলে তিলে তিলে গড়ে তুলেন এই মিউজিয়াম। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের বীরত্বগাথা ইতিহাস উপস্থাপন করেন মিউজিয়ামে। রাজশাহী-সহ উত্তরাঞ্চল, বিশেষত দেশের বিভিন্ন গ্রামীণ জনপদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংগ্রহ এবং বধ্যভূমি আবিষ্কার এবং শহীদদের হাড়-কঙ্কাল-মাথার খুলি ও ব্যবহৃত দ্রব্যদি সংগ্রহে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি নিয়মিত শহীদ পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। রচনা ও সম্পাদনা করেছেন অমূল্য তিনটি গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী’, ‘৬৯-এর ডক্টর জোহা’, ‘জীবন্ত শহীদ মজিবুর রহমান দেবদাস (যৌথ সম্পাদনা)’। বিশিষ্ট সংগঠক, সকলের শ্রদ্ধেয় গুণি মানুষ মনসুর আহমদ খান চাঁদপুরের সংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী, উচ্চশিক্ষিত পরিবারের সন্তান। নিজে ভাল ছবি আঁকতেন। সুদীর্ঘ সময় ছবি আঁকার স্কুল ‘অংকন’ পরিচালনা করেন। বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান তার বড় ভাই। রাজশাহী ও চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেন এবং এ মহাবিদ্যালয়ে দু’যুগব্যাপী খন্ডকালীন অধ্যাপনাও করেছেন। বর্তমানে কলেজটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদ। তিনি রা.বি মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডেরও প্রতিষ্ঠাতা।


©2022 newsprobaha.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.