শুক্রবার | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে কমিটি নিয়ে কোন্দলের জেরে দেড় বছর ধরে বন্ধ মসজিদ ও ঈদগাহ

চারঘাটে কমিটি নিয়ে কোন্দলের জেরে দেড় বছর ধরে বন্ধ মসজিদ ও ঈদগাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর চারঘাটে মসজিদ কমিটির আধিপত্য বিস্তার ও ইফতার নিয়ে কটুক্তি করাকে কেন্দ্র করে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ একটি জামে মসজিদ ও ঈদগাহ। কয়েক দশক আগে নির্মিত এই জামে মসজিদ ও ঈদগাহ টি উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের জৌতকার্তিক গ্রামের পূর্বপাড়ায় অবস্থিত।

এমনকি গত ঈদুল ফিতরের নামাজও আদায় করতে পারেনি ওই ৪ শতাধিক পরিবারের সদস্যরা। মুসল্লীদের নামাজ আদায়, বাচ্চাদের ইসলাম শিক্ষা সবই বন্ধ দেড় বছর ধরে। গুটিয়েক মানুষের দ্বন্দের কারনে গোটা এলাকার ধর্মপ্রান মানুষ নামাজ আদায় বন্ধ এটা মানতে পারছে না কেউ। তাই দ্রুত এর সমাধান করে মসজিদ ও ঈদগাহে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থার জন্য উপজেলা প্রশাসন এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক সময়ের ব্যস্ততম মসজিদের ৩ টি দরজায় ঝুলছে তালা। অপরিস্কারের কারনে মসজিদের ধুলাবালিতে পলেস্তার পড়েছে। আজান ও নামাজ হয় না দেড় বছর ধরে। এসি গুলোতে বেধেছে মাখড়সার জাল। এ যেন এক ভুতরে অবস্থা। এই গ্রামের অধিবাসি ও মসজিদের সদস্য সুমন (৪৫) এক ব্যাক্তি জানান, দীর্ঘদিন থেকে মসজিদটি বন্ধ থাকার কারনে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আশে পাশের গ্রামে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। অনেকেই আবার দুরে মসজিদ হওয়ায় নামাজ পড়াই ছেড়ে দিয়েছেন। কটু কথা ও মসজিদ দুরে হওয়ায় এ গ্রামের মানুষ আজ ধর্মবিমুখ হয়ে পড়ছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জোতকার্ত্তিক জামে মসজিদের ইমাম সাহেবকে বাদ দেয়াকে কেন্দ্র করে বর্তমান সভাপতি এএইচএম কামর্জুামান মুকুল গ্রুপের সঙ্গে সাবেক সভাপতি আসাদুল ইসলাম সেলিম গ্রুপের দ্বন্দ চলে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৮ এপ্রিল বিকেলে ওই গ্রামে দুগ্রুপের ইফতার রান্না করাকে নিয়ে কটুক্তি মুলক কথা বলায় সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় সেলিম গ্রুপের খোকন আলী নামে এক ব্যাক্তি। আহত হয় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন। এরপর নিহতর স্ত্রী রুপা বেগম বাদী হয়ে চারঘাট মডেল থানায় বর্তমান সভপতি মুকুলকে প্রধান আসামী করে ৩৪ জনের নামে একটি হত্যা দায়ের করেন। ওই মামলায় বর্তমানে মুকুলসহ ৪ জন জেল হাজতে বন্দী রয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এ দিকে মামলাটি বিচারাধীন থাকলেও গত দেড় বছর ধরে ওই গ্রামের মসজিদটি রয়েছে তালাবদ্ধ। ঈদগাহও রয়েছে বন্ধ। এ কারনে গ্রামের মানুষ পার্শবর্তী গ্রামের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে হয়। অনেকেই আবার নামাজ আদায় বন্ধ করে দিয়েছেন। সংঘর্ষের পর থেকে রয়েছে ঈদগাহে ঈদের নামাজ। ফলে আবারও চরম ক্ষোভ দানা বাধছে গ্রামের সাধারন মানুষের মাঝে।

সাধারন মানুষের কথা বিবেচনা করে এর সুষ্ঠ সমাধান করে মসজিদ ও ঈদগাহে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থার জন্য স্থানীয় সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলমসহ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
ওই মসজিদের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আফাজ উদ্দিন বলেন, আমরা ধর্মপ্রান মানুষ। আমরা চাই যে কোন সমাধানে মসজিদটি যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেয়া হোক। যাতে করে এ গ্রামের ধর্মপ্রান মানুষ গুলো নামাজ আদায় করতে পারেন।

নিমপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে মসজিদটি খুলে দেয়া এবং মসজিদের আমফল নিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। দ্রুত এর একটি সমাধান হওয়া জরুরী বলে মনে করেন তিনি।


©2022 newsprobaha.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.